December 23, 2024, 7:00 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
আসিফ জুবায়ের। ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য বিআরটিএ কুষ্টিয়া সার্কেলে আবেদন করেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। তখন ব্যবসায়িক কারণে আসিফ থাকতেন ঢাকায়। আবেদন করার জন্য কুষ্টিয়া আসলে তাকে অনেকেই দালালের মাধ্যমে করতে বলেন। কিন্তু আসিফ নিজে সিদ্ধান্ত নেন সরাসরি দেশের নিয়ম মেনে আবেদন করবেন। সেই সিদ্ধান্তই তাকে ভোগাচ্ছে দুই বছর। দুই বছর ১মাস পেরিয়ে গেলেও আজো তিনি পাননি লাইসেন্স।
দৈনিক কুষ্টিয়া কার্যালয়ে কথা হচ্ছিল আসিফ জুবায়েরের সঙ্গে। তিনি বলেন, আবেদনের সাথে সাথেই লার্নার পেয়ে যাই। মাস দুয়েক পর আমি পরীক্ষার তারিখ পেয়ে যাই। এরপর লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভাতে পাস করি। এ পর্যন্ত ভালই ছিলো। এরপর শুরু হলো হয়রানী- বলেন আসিফ। তিনি জানান, ফিল্ড টেস্টের দিনে আমি তিনটার দিকে স্টেডিয়ামে যাই। ১২ ফুট দুরত্ব বজায় রেখে মোটর সাইকেল রাউন্ড দিতে হয়। স্ট্রার্টিং পয়েন্টেই হতে হবে এন্ডিং। আমি শেষ করার আগেই একজন এসে বলেন আপনি অকৃতকার্য। আমি জানতে চাই- কেন আমি অকৃতকার্য হলাম। তারা কোন জবাব না দিয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করতে বলেন। আমি এরপরও ধৈর্য্য নিয়ে ব্যাংকে ২৩ টাকা ফি দিয়ে আবার পরীক্ষার ডেট পাই। আবার আমি পরীক্ষার আগের দিন ঢাকা থেকে আসি। এবারে আমাকে পাস করানো হয়। এরপর ১৮ই মার্চ ২০১৯ আমি সরকারি ফি ২৫৪২ টাকা ব্যাংকে জমা দিই। পরে ফিংগার প্রিন্ট এবং ছবি তোলার জন্য নতুন তারিখ দেয়। সেই অনুয়ায়ী এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর আমাকে বলা হয় অল্প সময়ের মধ্যেই লাইসেন্স কার্ড পেয়ে যাবেন। এরপর থেকে আমার লার্নার কপির ওপর একের পরে এক ডেট পড়তে থাকে। এমন অবস্থা হয় ওই কাগজটিতে নতুন ডেট এবং সাইন করার আর জায়গা অবশিষ্ট নেই। এরপর ২০২০ সালের জুন মাসে আমাকে লাইসেন্সের অনলাইন কপি দেয় বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। এরও আট মাস হলো, আমি এখনো পাইনি লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড।
আসিফ জুবায়ের আক্ষেপ করে বলেন, আমার সঙ্গে যারা এপ্লাই করেছিল, যারা আমার সঙ্গে পরীক্ষায় পাস করেছে তারা অনেক আগেই কার্ড পেয়ে গেছে। আসিফ বলেন, আমি সুষ্ঠুভাবে সরকারি নিয়ম মেনে আবেদন করেছিলাম। অসৎ উপায় অবলম্বনের কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। আমি প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম সরকারি অফিসে ইচ্ছা করলে নিয়মের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব। কিন্তু কুষ্টিয়া বিআরটিএতে আমি ব্যর্থ হয়েছি, খুব খারাপ লেগেছে। হয়েছে হিতে-বিপরীত। তিনি বলেন, এই বিআরটিএ দালালে ভরা। এক ধাপ পেরুতে গেলেও তাদের স্মরণাপন্ন হতে হয়। আমার কাছেও টাকা চেয়ে সহজে কাজ করিয়ে দেয়ার অফার দেয়া হয় কিন্তু আমি রাজি হয়নি। আমি চেয়েছিলাম দেরী হোক নিজে নিজেই করবো। কিন্তু আজো আমি কার্ড পেলাম না। এরপরও আসিফ জুবায়ের সেবা গ্রহীতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দালাল উপেক্ষা করে নিজেদের কাজ নিজে করুন। সবাই সচেতনভাবে দালাল উপেক্ষা করলে দালালমুক্ত হবে অফিস।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে বিআরটিএ কুষ্টিয়া সার্কেলের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply